রবিবার ০৫ মে ২০২৪
Online Edition

রাশিয়ার অস্ত্র কিনে যুক্তরাষ্ট্রের ধৈর্যের পরীক্ষা করছে ভারত

 

১৬ অক্টোবর, সাউথ এশিয়ান মনিটর : রুশ বিমানবিধ্বংসী অস্ত্র কেনার ভারতের সিদ্ধান্তটি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঐতিহাসিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তিকে ভণ্ডুল করে দেয়ার হুমকি সৃষ্টি করেছে বলে চলতি সপ্তাহে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন সিনিয়র রিপাবলিকান সিনেটররা।

সিনেটর জেমস ল্যাঙ্কফোর্ড ওয়াশিংটন এক্সামিনারকে বলেন, রুশ-ভারত চুক্তিটি ভারত-মার্কিন সমঝোতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তারা যখন রুশ অস্ত্র কেনা নিয়ে কথা বলে, তখন এর কী অর্থ হতে পারে, তা খুবই পরিষ্কার।

ভারত গত সপ্তাহে রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ বিমানবিধ্বংস ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি করেছে। এর ফলে ভারতের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের একটি আইন অনুযায়ী, কোনো দেশ রাশিয়ার কাছ থেকে বড় ধরনের অস্ত্র কিনলে তাদের ওপরও অবরোধ আরোপ করা হবে।

তাছাড়া রুশ-ভারত ওই চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে করা ভারতের নিরাপত্তা সহযোগিতামূলক সিওএমসিএএস-এর কার্যকারিত হ্রাস হতে পারে বলেও শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে।

সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান বব কোরকার বলেন, ভারতের সাথে সিওএমসিএএসএ চুক্তি সই করা ছিল বিরাট এক অগ্রগতি। এর ফলে একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক অংশীদারের সাথে নিরাপত্তা সহযোগিতা বেড়েছিল। ভারতের উচিত হবে না মার্কিন অবরোধ আরোপ হয় এমন কিছু করে এই অগ্রগতি হ্রাস করা।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইক পম্পেইও ও ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সাথে সই হওয়া ওই চুক্তি অনুযায়ী ভারতের কাছে স্পর্শকাতর সামরিক সরঞ্জাম হস্তান্তর ও গোয়েন্দা তথ্য তাৎক্ষণিক সরবরাহ করার ব্যবস্থা রয়েছে।

কিন্তু রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কেনায় যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধের হুমকিতে পড়ে গেছে ভারত। তবে ভারতের সেনাপ্রধান একে গুরুতর কিছু নয় বলে মনে করছেন।

জেনারেল বিপিন রাওয়াত বলেন, রাশিয়ানরা যখন আমেরিকান অবরোধের কথা জানতে চেয়েছিল, আমার জবাব ছিল এই যে হ্যাঁ আমরা জানি যে আমাদের ওপর অবরোধ আরোপ করা হতে পারে। কিন্তু আমরা স্বাধীন নীতি অবলম্বন করব। আমরা আমেরিকান প্রযু্ক্তি গ্রহণ করব। তবে অনুসরণ করব স্বাধীন নীতি।

ভারত স্নায়ুযুদ্ধের সময় জোট নিরপেক্ষ অবস্থানে ছিল। তারা ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র বা সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে জোট গড়তে চায়নি। তবে ওই সময় সামরিক সম্ভারের জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল। এর রেশ ধরেই বর্তমানে রুশ প্রতিরক্ষা শিল্পের সহযোগিতা অনিবার্য হয়ে ওঠেছে ভারতের জন্য।

এই অস্ত্র কেনা সত্ত্বেও ভারতের ওপর যাতে অবরোধ আরোপ না করা হয়, সে চেষ্টা করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি অংশ। বিশেষ করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ম্যাটিস এই লবিটি বেশ জোরালোভাবে করছেন।

কিন্তু সেটি ফলপ্রসূ হবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের সাথে রাশিয়ার সুসম্পর্ক রয়েছে। রুশ-ভারত সম্পর্কে সে বিষয়টির দিকেও নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র।

ল্যাঙ্কফোর্ড বলেন, দিল্লির সাথে সামরিক চুক্তির ফলে ভারতে সরবরাহ করা মার্কিন অস্ত্র সম্পর্কে প্রত্যক্ষ ধারণা পেয়ে যাবে রাশিয়া। তবে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ভারতে মোতায়েনের আগে পর্যন্ত ভারতের ওপর মার্কিন অবরোধ আরোপিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে হচ্ছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ